২২ শ্রাবণ কবিগুরুর তিরোধান দিবস উদযাপন
*রবি ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস পালিত :* *আমরা বাঙ্গালী,আগরতলা*
*,অনুপম পাল,বালিপিপলা:*
আমরা বাঙালী রাজ্য কার্যালয়ে রবিঠাকুরের প্রয়াণ দিবস পালিত।
আমরা বাঙালী রাজ্য কার্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় ২২ শে শ্রাবণ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস পালিত হয়। কবিগুরুর প্রতিকৃতিতে ফুলের মালা দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন রাজ্য সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল। এরপর প্রচার সচিব দুলাল ঘোষ সহ আমরা বাঙালী দলের অন্যান্য প্রতিনিধিগণ কবিকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আগামী কাল আবার রাখীবন্ধন উৎসব। পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ শক্তিকে উৎখাত করার জন্য বাংলার বিভিন্ন জায়গায় ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের জেরে ব্রিটিশ শাসকদের ঘুম উড়ে যায়। তখন বাংলার ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনকে দুর্বল করার জন্য শাসন কার্যের অসুবিধার অজুহাতে বাংলাকে তিন টুকরায় বিভক্ত করেন। কবিগুরু সেদিন বুঝতে পেরেছিলেন যে বাংলার ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনকে দুর্বল করে বাংলার হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে বাঙালীকে দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করছে।কবি ইংরেজ শাসকদের এই ঘৃণা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ কে ঐক্যবদ্ধ থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ করার আহ্বান জানান। সেদিন কবির আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলার শ্রমিক কৃষক বুদ্ধিজীবী ছাত্র যুব সহ মা বোনেরা ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে। সেদিন কবি স্বয়ং রাখী বন্ধন উৎসব সূচনার জন্য সকালবেলা গঙ্গার জগন্নাথ ঘাটে স্নান করে এসে হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে সকলের হাতে রাখী পরিয়ে বাংলার অখন্ডতা ও একতা রক্ষার জন্য হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান সকল ধর্মের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান।কবি লিখলেন-
বাংলার মাটি বাংলার জল
বাংলার বায়ু, বাংলার ফল
পূণ্য হউক হউক হে ভগবান।
মা বোনেরা সহ সকলে মিলে এই গান গাইতে গাইতে কলকাতায় এক বিশাল শোভাযাত্রা বের করেন। পরবর্তীতে নজরুল হিন্দু মুসলিমের মিলন কামনায় লিখেছেন -
মোরা একেই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান, মুসলিম তাঁর নয়নমণি হিন্দু তাহার প্রাণ।
শেষ পর্যন্ত হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফলে ১৯১১ খ্রীষ্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ রদ করতে বাধ্য হয়।
শেষ পর্যন্ত ইংরেজ শাসক এই দেশ ছাড়ার আগে দেশীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নেতাজীকে দেশান্তরী করে হিন্দি ও উর্দু সাম্রাজ্যবাদীদের সাথে ষড়যন্ত্র করে বাঙালী জাতিকে ধর্মের দোহাই দিয়ে টুকরো টুকরো করে দেশের শাসনক্ষমতা গদী লোভী নেতাদের হাতে দিয়ে যায়। নেতাজী বিদ্বেষী দল গুলো কংগ্রেস কমিউনিস্ট হিন্দু মহাসভা। তাদের এই দীর্ঘ শাসনে বাঙালী জাতি আজ বিভিন্ন শাসক গোষ্ঠীর বিমাতৃসুলভ আচরণের ফলে বাঙালী আজ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। তেমনি আবার রাজ্যে রাজ্যে শ্লোগান উঠেছে গো ব্যাক বাংলাদেশী। শুধু তাই নয় ত্রিপুরা আসামে বার বার বাঙালীরা আক্রান্ত হয়ে আসছে দশকের পর দশক ধরে ্কোন দল আজ পর্যন্ত বাঙালী জাতির উপর যে নির্যাতন চলছে তার বিরুদ্ধে বিধানসভা কিংবা লোকসভায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে দেখেনি। এখন আবার গোঁদের উপর বিষফোঁড়া মারাত্মক আকার ধারণ করেছে খোদ হিন্দুত্ববাদী সরকার যে সকল রাজ্যে ক্ষমতায় আছে সে সকল রাজ্যে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশী আখ্যা দিয়ে বাঙালী পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বৈধ কাগজপত্র থাকা স্বত্তেও তাদের উপর শারীরিক মানসিক নির্যাতন চলছে। জোর করে পুশব্যাক করছে। শুধু তাই নয় বাংলাকে বাংলাদেশী ভাষা হিসেবে তকমা দিচ্ছে আবার বিজিপির আরেক নেতা বলেছেন বাংলা কোন ভাষায় নেই।দেশ ভাগের বলি বাঙালীকে উৎখাত করতে এন আর সি ও সি আই আর এনে বাঙালীদের রাষ্ট্রহীন করার এক ঘৃণা ষড়যন্ত্র চলছে। আর এই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে বাঙালী বিরোধী শক্তি আসাম ত্রিপুরা সহ বিভিন্ন রাজ্যে উস্কানি মূলক বক্তব্য রাখছে। আসামে ইতিমধ্যে কয়েক হাজার বাঙালীর ঘর বাড়ি ভেঙ্গে দিয়ে তাদের উৎখাত করছে। ত্রিপুরাতেও আমরা সেদিন একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাসের কন্ডাক্টর ড্রাইভার সহ যাত্রীদের উপর আক্রমণ তীব্র ভাবে আক্রমণ করেছে।তাই আজকের দিনে আহ্বান করছি ১৯০৫ সালে বাঙালী জাতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার যে পরিকল্পনা শুরু হয়ে ছিল এখন ভারতের বিভিন্ন রাজ্য সহ পার্শ্ববর্তী দেশে চরম আকার ধারণ করেছে।তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই মেকি বাঙালী দরদী রাজনৈতিক কংগ্রেস সিপিএম তৃণমূল গেরূয়া দল গুলোর হাত থেকে বাঙালী জাতিকে রক্ষা করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান করছি। কবি বাঙালী জাতি তার জাতির প্রতি উদাসীনতা দেখে আক্ষেপ করে বলেছিলেন হে বঙ্গ জননী রেখেছ বাঙ্গালী করে মানুষ করনি।তাই আসুন আমাদের মনীষীদের স্বপ্ন কে এবং বাঙালী জাতিকে পুনরায় উজ্জিবিত করতে সকলে হাতে হাত মিলিয়ে এগিয়ে যায়।
Comments
Post a Comment