ডাক্তার অর্ধেন্দু কুমার দে কে অসম বাসী মনে রাখবে

আসামের প্রাক্তন মন্ত্রী, নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের প্রাক্তন সর্ব ভারতীয় সভাপতি, নতুন হোজাইর, রূপকার প্রয়াত ডাঃ অর্ধেন্দু কুমার দে কে আকাশের ঠিকানায় চিঠি :-
‎প্ৰিয়  ডাক্তার বাবু ,
‎     আজ  থেকে তিন বছর আগে  আজকের দিনে(২৭  সে জুলাই) আপনার প্রাণ পাখি এই গ্রহের সকল দেনা পাওনা চুকিয়ে খাঁচা ছেড়ে চির শান্তির অদৃশ্য নীড় স্বর্গে আশ্রয় নিয়েছে-  আপনার স্ত্রী মায়া দেবীর প্রাণ পাখির  নীড়ে। আপনাদের এক মাত্র সন্তান ননাও গত বছর আপনাদের নীড়ে চলেগেছে। স্বর্গের অদৃশ্য নীড় আপনাদের কলকাকলিতে নিশ্চয় মুখরিত!? 
‎ জানেন ডাক্তার বাবু,
‎   সেদিন অর্থাৎ মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ মহাশয়ের শেষ বিধান সভায়(২০২১সে র মার্চ মাসে) আপনি বিধান সভা অধ্যক্ষ মাননীয় প্রণব গগৈ মহাশয়ের সাথে যে ঘটনাটি ঘটিয়েছিলেন তার জেরেই আজব্দী আসামের বাংলাভাষী জনগণকে আসামে  দ্বীতিয় শ্রেনীর নাগরিকে অবনমিত হতে হয়নি কিন্তু খিলঞ্জিয়া নামের জুজু জুর কদমে এগুচ্ছে। তালে তাল মিলিয়ে  বাংলা ভাষীকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশী তকমা লাগিয়ে দেবার প্রচ্ছন্ন হুমকিও ঝড়ের গতিতে আসছে। এতে "দুলিতেছে তরী ফুলিতছে জল ভুলিতেছে মাঝি পথ, " তবু আমরা নির্লিপ্ত, নির্বিকার । স্ত্রী-পুত্র-পরিবার নিয়ে যেন-তেন-প্রকারেনো বাঁচার তাগিদে হ্যাঁ জী, হ্যাঁ জী করছি। নেই কোনও কান্ডারি।কে দেবে হাক, "কে আছো জওয়ান হও আগুয়ান, হাঁকিছে ভবিষ্যত। এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার।" কারন "অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া, জানেনা সন্তরণ"-  এ হেন সময়ে মনে হয়  যেন অর্ধেন্দু বিহীন আসামের বাঙালি মেরুদন্ডহীন, কন্ঠ হারা সরীসৃপ! বাঙালির অপমানে অর্ধেন্দুর গর্জনে যে ভাবে কাঁপত  আসাম বিধান সভা আজ আর সেভাবে কাঁপে না- যদিও জনা কয়েক বাঙালি বিধায়ক বিধান সভার শোভা বর্ধন করছেন-  আর্থিক প্রতিপত্তিতে বিকশিত হচ্ছেন । কিন্তু বাংলা ভাষা-  "যে ভাষাতে নিতাই গৌরা আনলো দেশে ভক্তির ধারা" কি জাহান্নামে যাবে???!!! নেই উত্তর।
‎ প্রিয় ডাক্তার বাবু,
‎ আপনার প্রাণের শহর  হোজাইতে শান্তি বন নামক একটি উদ্যান গড়ে তিলে তিলে তিলোত্তমা করে হোজাই বাসীকে নন্দন কানন উপহার দিয়েছিলেন, চেয়েছিলেন  আত্মা মুক্ত অর্ধেন্দু নিরেট মর্মর মূর্তি হয়ে হোজাই বাসীর হৃদ মাঝারে থাকতে। কিন্তু হায়! আপনার প্রাণের শহরের' ''ইটের পাঁজরে লোহার খাঁচায়"থাকা কতিপয় অতি সঞ্চয়ী ক্রোড় দানবের অকৃতজ্ঞতা। শাসক প্রশাসকের আপনার প্রতি অবজ্ঞা বাধা সাদছে আপনার হৃদয়ে পোষিত ইচ্ছার  যদিও আমাদের চেষ্টার কার্পন্য নেই।      কলকাতায় আপনার স্নেহ ধন্যা অধ্যাপিকা মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্বাবধানে তৈরি হচ্ছে আপনার মর্মর মূর্তি-আজ না হয় কাল সসম্মানে স্থাপিত হবে  নিদির্ষ্ট স্থানে। কথা দিলাম। অকৃতজ্ঞ হতে দেব না আপনার প্রিয় হোজাই বাসীকে।
‎ আপনার মানস কন্যা হোজাই গার্লস কলেজ আজ পূর্ণ যুবতী। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে অধ্যক্ষ সহ কয়েক জন অধ্যাপক, আপনি এই গ্রহ ছাড়ার  ছয় মাস পূর্বে সরস্বতী পূজোতে কলেজে গেলে আপনার দেহাবসানের আপনার প্রতি মূর্তি স্থাপনের অপনাকে দেয়া প্রতিশ্রুতি পালনে রাজদণ্ডের ভয়ে এক এগিয়ে দু পা পিছিয়ে যাচ্ছেন । ঈর্ষাম্বিত কেউ কেউ পর্দার আড়ালে কল কাঠিও নাড়ছেন মূর্তি স্থাপনের বিরুদ্ধে। ধিক তাঁদের মানসিকতাকে।তবু আমরা আশাবাদী ,বিশেষ করে অধ্যক্ষ ও অধ্যাপক বৃন্দের উপর। এক সময় ভয় ভীতি ও ভীরুতার শৃঙ্খল ছিঁড়ে তাঁরা বের হয়ে এসে বলবে, "ডাক্তার বাবু, আমরা অকৃতজ্ঞ নই।আপনার মানস কন্যার অঙ্গনে আপনার প্রতিমূর্তি স্থাপন করে আমদের নৈতিক ঋণের বুঝা কমাবো। কথা দিলাম।"
‎  ডাক্তার বাবু,আসামের বাঙালি জাতি কি আপনার ঋণ পরিশোধ করতে পারবে? আপনি না থাকলে আসামের বাঙালি সম্প্রদায়  প্লাটফর্মে জন্ম গ্রহণ করা জাতি রূপে বিভূষিত হয়ে দিন কাটাতে হত। সে কথা আমরা ভুলি নি। ভুলবনা।
‎ তাই,
‎ আপনার তৃতীয় মৃত্যু বার্ষিকীতে কথা দিলাম, "আপনার স্মৃতি রক্ষা করব। আপনার স্বপ্নের শান্তি বনে স্থাপন করব আপনার প্রতি মূর্তি।"
‎ডাঃ অর্ধেন্দু কুমার দে তোমায় নমন।
‎ অর্ধেন্দু দে অমর রহে।
‎ ইতি  
‎ কৃতজ্ঞ হোজাই বাসীর হয়ে
‎ শ্রী বিজয় চক্রবর্তী।
‎ সাধারন সম্পাদক 
‎ডাঃ অর্ধেন্দু কুমার দে স্মৃতি রক্ষা সমিতি।
‎ হোজাই।

Comments

Popular posts from this blog

মহালয়ার পবিত্র তিথিতে প্রকাশ পাবে বাংলা শারদ সংখ্যা নয়া ঠাহর

শুভ মহালয়া তিথিতে ১৮ তম "নয়া ঠাহর পুজো সংখ্যা প্রকাশ

প্রণব আচার্য্য লিখিত বৈষ্ণব গ্রন্থ প্রকাশ