মুসলিম হিন্দু সেজে ভারতে বছরের পর বছর কাটাচ্ছে

মধ্যপ্রদেশ থেকে বাংলাদেশী সন্দেহে ধরা হলো পলাশ অধিকারীকে। অভিযোগ তিনি বাংলাদেশী। কিন্তু পলাশের কাছে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড ছিল সে সঙ্গে সঙ্গে ইত্যাদি দেখিয়ে প্রমাণ করল সে খাঁটি ভারতীয় এবং একজন হিন্দু। সে কোনমতেই বাংলাদেশী নয়। তখনো পুলিশের সন্দেহ সে বাংলাদেশী। শেষ পর্যন্ত তাকে আদালতে তোলা হল। আদালত জিজ্ঞাসা করল- আপনার নাম?
পলাশ অধিকারী
বয়স? ৪২
বাবার নাম?
রমেশ অধিকারী
ঠিকানা?
কাশিমপুর, মালদহ, পশ্চিমবঙ্গ।
ভোটার লিস্ট এবং আধার কার্ড মিলিয়ে দেখা গেল পলাশ যা যা বলছে সবই সত্য। রমেশ অধিকারীর চার ছেলে পলাশ, সুব্রত, মিহির, সৌমেন ও রাহুল। কিন্তু পুলিশ তখনও অভিযোগ করে যাচ্ছে সে বাংলাদেশী। কিন্তু তা কি করে হয়? রমেশ অধিকারী ভারতীয়। তার জন্ম ১৯৬২ সালে মালদায়। ১৯৮৪ সাল থেকে সে নিয়মিত ভোট দিচ্ছে এবং তার পরিবারের একজন স্ত্রী ও চার পুত্র সবাই এখন ভোটার তালিকায় যুক্ত। তাহলে কি পুলিশ ভুল বলছে? খোলা হলো নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা। সেখানেও একই ছবি!! রমেশ বাবু ভারতীয় ও হিন্দু অতএব তাঁর স্ত্রী সহ চার ছেলেও ভারতীয়। তাহলে পলাশ অধিকারীকে ছেড়ে দেওয়া হোক।

কিন্তু হঠাৎ করেই বিচারকের সন্দেহ হয়। তিনি বললেন ২০০২ সালের SIR এর রেকর্ড খোলা হোক। রেকর্ড দেখে তো বিচারকের চক্ষু চড়ক গাছ!!! রমেশবাবুর দুই ছেলে সুব্রত ও সৌমেন। একজনের বয়স ২৮ একজনের ৩০। তাহলে পলাশ ও রাহুল কার ছেলে? ২০১০ সালের রেকর্ড খোলা হল সেখানেও রমেশ বাবুর দুই ছেলে সুব্রত ও সৌমেন। সেখানেও পলাশ ও রাহুলের নাম নেই। খোলা হল ২০১৫ সালের রেকর্ড সেখানে রমেশ বাবুর চার ছেলে হয়ে গেল। চলে এলো পলাশ ও রাহুলের নাম। সঙ্গে সঙ্গে পলাশের অভিযোগ ২০১৫ সালে তার নাম ভোটার লিস্টে উঠেছে। বেশ ভালো কথা। এবার চেক করা হলো রমেশ বাবুর রেকর্ড। দেখা গেল রমেশবাবু বিবাহ করেছেন ১৯৯৩ সালে। প্রথম সন্তান সুব্রত জন্মগ্রহণ করে ১৯৯৫ সালে তার বয়স বর্তমানে ৩০, দ্বিতীয় সন্তান সৌমেন জন্মগ্রহণ করে ১৯৯৭ সালে তার বয়স বর্তমানে ২৮। তাহলে ৪২ বছর বয়সী পলাশ কিভাবে রমেশ বাবুর পুত্র হন? কোনভাবেই যখন কিছু সুবিধা করা গেল না তখন বেরিয়ে এলো আসল সত্য। পলাশ অধিকারী আসলে শেখ মইনুদ্দিন বাড়ি বাংলাদেশের খুলনা, আহমেদপুর। আরও আশ্চর্যের বিষয়ে রমেশ অধিকারী এই শেখ মইনুদ্দীনকে চেনেন না। জিজ্ঞাসা করা হল রাহুল অধিকারীর কথা। তিনি তার নামই শোনেননি। গ্রামের সাধারণ কৃষক রমেশবাবু ঘুণাক্ষরেও টের পাননি কিভাবে এই শেখ মইনুদ্দিন তার ছেলে পলাশ অধিকারী হয়ে গিয়েছে। যদিও রাহুল অধিকারী কে? সেটি এখনো জানা যায়নি। পুলিশ এখনো তাকে খুঁজছে। রমেশবাবু সাধারণ মানুষ, অতকিছু বোঝেন না। যখন যখন ভোট আসে তখন তিনি গিয়ে ভোট দিয়ে আসেন। স্থানীয় নেতারা এই বিষয়টা সব জানলেও সবাই নিশ্চুপ। এই সুযোগেই শেখ মইনুদ্দিন ভারতীয় সরল রমেশ অধিকারী কে বাবা বানিয়ে নিজে পলাশ অধিকারী সেজে দিব্যি হিন্দু ভারতীয় হয়ে গিয়েছেন। এবং বিগত ১০ বছর পরিযায়ী শ্রমিকের আড়ালে দিব্যি মৌলবাদী ক্রিয়াকলাপ চালিয়ে গিয়েছে। এভাবেই হাজারে হাজারে শেখ মইনুদ্দিন ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা ভারতবর্ষে অনুপ্রবেশ করে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড বানিয়ে দিব্যি ভারতীয় বনে গিয়েছে। এই সমস্যার সমাধান পুনরায় ভোটার লিস্টের নিবিড় অনুসন্ধান। না হলে অনুপ্রবেশকারী ধরার কোন উপায় নেই। তাই সাধু সাবধান!! যেটা করা হচ্ছে সেটা ভারতবর্ষের নাগরিকদের স্বার্থেই করা হচ্ছে। যাঁরা সত্যিকারেরই ভারতীয় নাগরিক তারা নিশ্চিন্ত থাকুন তাদের কোন ক্ষতি হবে না।  (চন্দন মিত্রের সৌজন্যে)

Comments

Popular posts from this blog

মহালয়ার পবিত্র তিথিতে প্রকাশ পাবে বাংলা শারদ সংখ্যা নয়া ঠাহর

শুভ মহালয়া তিথিতে ১৮ তম "নয়া ঠাহর পুজো সংখ্যা প্রকাশ

প্রণব আচার্য্য লিখিত বৈষ্ণব গ্রন্থ প্রকাশ